প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পাড়ে বাংলাদেশ-ভুটানের যৌথ উদ্যোগে কৃষিভিত্তিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। কৃষিভিত্তিক বিশেষ ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’। কুড়িগ্রাম ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে ১৩৩ দশমিক ৯২ একর জমিতে ওই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২৮ মার্চ ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামের ওই বিশেষ অর্থনৈতিক অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
ভুটানের রাজার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন কুড়িগ্রামে এসেছেন। বৃহস্পতিবার(২১ মার্চ) দুপুরে তিনি সরেজমিনে ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়ক সংলগ্ন ওই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেন। এরপরে বিকেলে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়তনে তিনি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এসময় তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ সরকারের সাথে ভুটানের রাজার ব্যক্তিগত পর্যায়ের সম্পর্ক রয়েছে। সেই ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ভুটানকে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে ভুটান বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির উদ্যোগ নেয়। ইতিমধ্যে গত ১০ মার্চ ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গা পরিদর্শন করেছেন। আগামী ২৭ মার্চ ভুটানের সাথে ওই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের এমইউ সমঝোতা স্বাক্ষর হবে এবং ২৮ মার্চ ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামের ওই বিশেষ অর্থনৈতিক অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোন ধরণের শিল্প কারখানা হবে সেটি ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ না করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দেশ হিসেবে ভুটান কৃষিপ্রধান রাষ্ট্র। তাই এখানে কৃষিভিত্তিক শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। উদাহরণস্বরুপ তিনি ভুটানের মাল্টা সড়কপথে কুড়িগ্রামে এনে জুস তৈরির কারখানার কথা বলেন। এছাড়াও ভারী ও মাঝারী মানের শিল্পকারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা তিনি জানান।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের এক জনসভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এরপর ২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রানীর সাথে দ্বিপাক্ষীয় সভায় প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করবার প্রস্তাব দেন। সেই আহবানে সাড়া দিয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে বাংলাদেশ ভারতের যৌথ উদ্যোগে জিটুজি ভিত্তিক ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ হচ্ছে।
ভুটানের রাজার আগমনের উপলক্ষে প্রস্তুতিপর্বে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় এসময় তাঁর সাথে বেজার মহাব্যবস্থাপক শেখ মো. যোবায়ের হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র মো. কাজিউল ইসলাম উপস্থিতি ছিলেন।