ঢাকা১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কেমন আছে কদমতলা

প্রতিবেদক
admin
এপ্রিল ১১, ২০২৪ ১১:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফজলুল করিম ফারাজী

ভূপেন্দ্র, কদমতলা কি এখনো আছে?
নাকি শুধু সাঁটলিপির ওই মানচিত্রটাই পড়ে আছে?

শুনেছিলাম সতেরোর বন্যা নাকি খুব ভেঙেছে,
ধরলার গর্জনে নাকি মানুষ জীবন নিয়ে পালিয়েছে?

আচ্ছা, সে বছর ওই মরা নদীটার অত রাগ উঠেছিল কেন?
কেন নিজের রাগে—
সহজ-সরল মানুষগুলোর বুকের পাঁজর ভাঙছিল—বলতে পারো?
ওই বছর ধরলার দু’কূলেই কেন আঁছড়ে পড়েছিল
আহাজারি আর কান্নার ঢেউ—বলতে পারো ভূপেন্দ্র?

ক’দিন পরে তো ঠিকই ডাকাতটা শান্ত হলো,
অথচ বাপ-দাদার ভিটেমাটি আঁকড়ে ধরা কদমতলা হলো বাস্তুহারা।

শুনেছি তমিজ ফারাজী নেই,
হামুদ্দি ব্যাপারি গত হয়েছে কতকাল।
গ্যাস ব্যাপারির সেই চরও নাকি নেই;
তাহলে তিন গ্রামের মানুষ কোথায় ঘুমায়—
কোথায় বিচার খোঁজে, বলতে পারো?
ব্যাপারিরা তো দুনিয়ার কত মানুষের বিচার করতো
ওর বিচার কেন করেনি?

ভূপেন্দ্র, তুমিই বা কোথায় আছো, কেমন আছো
কেমন আছে তোমার ওই আকাশ সমান শিমুল গাছ;
খোঁজ রাখো! নাকি বয়সের ভারে সব ভুলে গেছো?

আচ্ছা, বড় মাঠে কি এখনো সাত গ্রামের মানুষ আসে;
নেঙলার বাজার, নয়ার হাট, ভেলুর বাজার
সপ্তাহে এখনো কি দু’দিন বসে?

মনে পড়ে ভূপেন্দ্র,
কত বছর তাবুজের মেলা দেখা হয় না;
কুড়ার পাড়ে এখনো কি ওই মেলা বসে?
গিদালের ভিটায় কি লাঠি খেলা জমে;
জারিগান, পালাগানে বেগমগঞ্জের ছুকরিরা কি আজো নাচে?

কদম দৌড়ের ঘোড়া খেলা দেখার বড় শখ জাগে ভূপেন্দ্র—
আচ্ছা, ঘোড়া নাজিরের সাদা ঘোড়াটা কি এখনো আছে;
জানো কি কিছু?
নাকি কদম দৌড়ে দৌড়াতে দৌড়াতে তুমিও ক্লান্ত হয়ে
কদমতলার দুঃখ গোনো কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর বাঁকে।