কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ২৫ মার্চ
কুড়িগ্রামে চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মাচাবান্ধা গ্রামে হঠাৎ দমকা ঝড়ে তছনছ হয়ে যায় আব্দুল মজিদ৫০)ও মোছাঃ এসমোতারা বেগমে ৪৪)র বসতবাড়ি।উপায় না পেয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেয় তারা।সংসারে উপার্জন করার মত কেউ না থাকায় গত দুদিন ধরে ভেঙে যাওয়া ঘর আসবাব পত্র মাটিতে পড়ে আছে।এমন অবস্থায় প্যারালাইজড স্বামীকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই দম্পতি।
গত শনিবার ২৩ মার্চ সন্ধার আগে দমকা ঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে তছনছ হয়ে পড়েছে পরিবারটির।
জানা গেছে, এসমোতারা স্বামী সন্তান নিয়ে প্রতিবেশি চাচার এক শতক জমিতে ঠাঁই নেয়। প্যারালাইজড হয়ে এক পা বিকল নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালায়।ঘরে তিন ছেলে ও এক মেয়ে থাকলেও অভাবের সংসারে বড় ছেলে আশরাফুল (১৬) কে লেখাপড়া করতে পারেনি। যার ফলে লেখাপড়া বাদ দিয়ে সে কাজ করে সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে।অপর দিকে ছোট মেয়ে মনি (১৪) কে বিয়ে দিয়েছেন পরিবার। বাকি আরও দুই ছোট ছেলে রয়েছে পরিবারে। তবে মেয়েকে বিয়ে দিলেও দায়িত্ব কমেনি বরং অনেক গুণ বেড়েছে দায়িত্ব। সেও থাকেন এখন বাবা-মায়ের সাথে।
ভিক্ষাবৃত্তি করে চার সন্তান ও স্ত্রীর মুখে খাবার তুলে দেন বাবা আব্দুল মজিদ। অন্যের জায়গায় সাজানো-গুছানো সংসার নিমিষেই তছনছ হয়ে গেছে ঝড়ে। কেননা ঝড়ে রান্নাঘর ও থাকার একমাত্র ছোট ঘরটি ভেঙে তছনছ হয়েছে তাদের। এখন খোলা আকাশের নিচে এই পরিবারের বসবাস।
গত শনিবার হঠাৎ ঝড়ে কুড়িগ্রামের চিলমারীর থানাহাট ইউনিয়নের মাচাবান্দা এলাকায় ঝড়ে তাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার কারণে আশ্রয় নিয়েছে পাশেই অন্যের একটি ঘরে।
আব্দুল মজিদের স্ত্রী এসমোতারা বলেন, গত শনিবার হঠাৎ ঝরে সব শেষ হয়ে গেছে। থাকার আশ্রয় টুকু আর থাকল না। অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি, অনেক কষ্টে একটি ঘর তুলেছি। সেটাই শেষ, এখন থাকব কই? খাব কি কিছুই ঘরে নাই।
তিনি বলেন, স্বামী প্যারালাইজড ঠিক ভাবে চলতে পারেন না। কাজও করতে পারেন না। উপায় না পেয়ে ভিক্ষা করে সংসার চালান। টাকার অভাবে ছেলে মেয়েদের পড়াতে পারি নাই।
তিনি আরও বলেন, রোববার রাতে পাশের বাড়ির লোকজন খাবার দিয়েছে,তা খেয়ে রোজা আছি। ঘরে যে চাল ছিলো সব ভিজে একাকার হয়েছে। কি করব, কই থাকমো, কি খাবো এই নিয়ে চিন্তায় আছি।
সরকারি ঘর পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যাদের টাকা আছে তারাই ঘর পাবে। আমরা পাবো কিভাবে? নিজের জায়গা বলতে কিছু নেই। তারপর উপজেলায় গিয়েছি ঘর চাইছি পাবো কিনা জানিনা।
থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সেদিন (গত শনিবার) ঝড়ে আমার ইউনিয়নের অনেক বাড়িঘর গাছপালার ক্ষতি হয়েছে। তিনজন আহতও হয়েছে। তবে মাচাবান্দার দিকে একটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে বিষয়টি কেউ আমাকে জানায় নাই।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিনহাজুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে পরিবারটির ক্ষয় ক্ষতি পরিমাণ সম্পর্কে জানতে বলা হয়েছে। এছাড়া ওই পরিবারটিকে উপজেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।