কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ ১৬ মে
কুড়িগ্রামে টানা ৪২ বছরে ধরে রোজা রাখা দিনমজুর ইনছান আলী এবার যাচ্ছেন পবিত্র হজ্ব পালন করতে।দরিদ্র পরিবার থেকে দিনমজুরের হজ্বে যাওয়ার এমন খবরে খুশি স্বজনসহ প্রতিবেশিরা।
ইনছান আলী কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামের মৃত নছর উদ্দিন মুন্সি’র ছেলে।তার সম্পদ বলতে ১৪ শতক জমি ও বসতভিটা ছাড়া কিছু নেই।তিনি ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ের বাবা।ছেলেরাও দিনমজুর কোন রকম যা দেয় তা দিয়ে চলে ইনছান আলীর সংসার। তিন মেয়ে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। মেয়েরা আছেন তাদের স্বামীর সংসারে।
কথা হয় ইনছান আলীর সাথে তিনি বলেন, আমার বাবা ছিল দরিদ্র। টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারি নাই। বাবার স্বপ্ন ছিল তিনি আমাকে মাদ্রাসা পড়াবেন।কিন্তু অভাব অনটনের কারনে পড়াশোনা করা সম্ভব হয় নাই। পরে ৫ বছরের তাবলীগে গিয়ে ধর্ম শিক্ষা নেই।সেই থেকে টানা ৪৫ বছর ধরে নামাজ রোজা পালন করে আসছি।আমার স্বপ্ন ছিল হজ্জে যাওয়ার। নামাজের মোনাজাতে আল্লাহ পাকের কাছে প্রার্থনা করতাম আল্লাহ পাক আমাকে যেন হজ্জ যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।অবশেষে মোনাজাত কবুল করেছেন এক সহৃদয় বান মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ বাহালুল হক চৌধুরী আমাকে হজ্জে পাঠানোর সার্বিক খরচ বহনের দায়িত্ব নেন। আল্লাহ পাক বেঁচে রাখলে আগামী ১০ জুন হজ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হবো।
তিনি আরো বলেন, টানা ৪২ বছরে কখনো রোজা রাখা ছাড়ি নাই।বছরের নির্দিষ্ট ৫ দিন বাদে সারা বছর রোজা রেখে এসেছি।অভাবের সংসারে রোজা রাখাও অনেক সময় কষ্টের হয়। কতদিন যে শুধু পানি খেয়ে রোজা রেখেছি। সেহরিতে খাবার না থাকায় মুড়ি, চিড়া কখনো কচু গাছ সেদ্ধ করে খেয়ে রোজা রেখেছি। যত কষ্টই হোক রোজা কিন্তু ছাড়িনি। ইফতারে কখনো চকলেট কখনো শুধু পানি কখনো আবার গাছের পাতা চিবিয়ে ইফতার করতাম। খোদার কাছে চোখের পানি ছেড়ে বলতাম খোদা আমাকে যতদিন হায়াত দিয়েছেন আমি যেন ততদিন রোজা রাখতে পারি।
তিনি আরো বলেন, টানা ৪২ বছরে কখনো রোজা রাখা ছাড়ি নাই।বছরের নির্দিষ্ট ৫ দিন বাদে সারা বছর রোজা রেখে এসেছি।অভাবের সংসারে রোজা রাখাও অনেক সময় কষ্টের হয়। কতদিন যে শুধু পানি খেয়ে রোজা রেখেছি মনে নেই। সেহরিতে খাবার না থাকায় মুড়ি, চিড়া কখনো কচু গাছ সেদ্ধ করে খেয়ে রোজা রেখেছি। যত কষ্টই হোক রোজা কিন্তু ছাড়িনি। ইফতারে কখনো চকলেট কখনো শুধু পানি কখনো আবার গাছের পাতা চিবিয়ে ইফতার করতাম। খোদার কাছে চোখের পানি ছেড়ে বলতাম খোদা আমাকে যতদিন হায়াত দিয়েছেন আমি যেন ততদিন রোজা রাখতে পারি।
ইনছান আলীর প্রতিবেশি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি ইনছান আলী চাচা প্রতিদিনই রোজা রাখেন। তিনি অত্যন্ত ধার্মিক মানুষ। এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা করেন না। চাচা দেখা হলেই হজ্বে যাওয়ার কথা বলতেন। আল্লাহ ওনার নিয়ত কবুল করেছেন।
স্কুল শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, অভাব অনটনের সংসারে থেকেও ইনছান আলী কখনও ধর্মবিমূখ হননি। টানা প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে রোজা পালন করে আসছেন। তাঁর হজ্বে যাওয়ার জন্য যিনি ব্যবস্থা করেছেন আমরা এলাকাবাসী তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। আল্লাহ যেন তাঁকেও বেহেশত নসিব করে সে কামনা করছি।
আজকের কুড়িগ্রাম /ফারাজী