প্রতিনিধি ঢাকা ২৫ মার্চ
রংপুরে দরিদ্রতা কমে নেমে এসেছে অর্ধেকে। অপর দিকে এক সময়ের দেশের শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত বরিশালে দারিদ্র বেড়েছে।
বিবিএসের তথ্য মতে মূলত কৃষিনির্ভর অর্থনীতি হলেও রেমিট্যান্স আর ছোট-বড় শিল্পায়নের প্রভাবে রংপুর মঙ্গা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নের দিকে এগুচ্ছে।
তাদের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে দারিদ্র্য নেমে এসেছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে, ৬ বছর আগে যা ছিলো ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
বর্তমানে পুরো দেশে অতিদ্রারিদ্র্য নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে, ২০১৬ সালে যা ছিলো ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২ বলছে গত ৬ বছরে রংপুরে দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে অর্ধেকে। সারা দেশে দারিদ্র্য কমেছে।
গত বুধবার ঢাকা আগারগাঁয়ে পরিসংখ্যান ভবনে জরিপের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। তাতে উঠে এসেছে রংপুর বিভাগের অর্থনৈতিক উন্নয়নের।চিত্র।
বিবিএসের তথ্য মতে গত ৬ বছরে রংপুর বিভাগে দারিদ্র্য নেমে এসেছে অর্ধেকে। ২০১৬ সালের জরিপে যেখানে দারিদ্র্যের হার ছিল প্রায় ৪৭ শতাংশ, তা নেমে এসেছে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশে।
জরিপের চূড়ান্ত ফলাফলে জানানো হয়, দারিদ্র্য কমেছে পুরো দেশেই। গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পুরো দেশে দারিদ্র্য নেমে এসেছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে। ৬ বছর আগে তা ছিলো ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ ২০১৬ থেকে ২০২২ সময়ে দারিদ্র্য কমেছে প্রায় চার ভাগের এক ভাগ।
এছাড়া বর্তমানে সারা দেশে অতিদ্রারিদ্র নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে। ২০১৬ সালে তা ছিলো ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ছয় বছরে অতিদারিদ্র্য কমেছে অর্ধেকেরও বেশি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন অতিদারিদ্র্য কমাতে সরকারের নেয়া সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম অবদান রেখেছে। এই কার্যক্রম আরও বাড়ানোর পক্ষে মত দেন অনেক বক্তা।
অনুষ্ঠানে বলা হয় গত ৬ বছরে ঢাকা, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে ঢাকায় দারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ৯, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ১৬ দশমিক ৭, সিলেটে ১৭ দশমিক ৪ এবং ময়মনসিংহে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ।
বর্তমানে রংপুরকে ছাড়িয়ে দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি বরিশালে।
অন্যদিকে জরিপে প্রকাশ পায় সবচেয়ে কম দারিদ্র্য রয়েছে খুলনা বিভাগে। বিভাগটিতে দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
বরিশালে দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব দীপংকর রায় বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে নীতিনির্ধারকরা ভেবে দেখতে পারেন। তবে বরিশালে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সবচেয়ে বেশি। সেখানে দারিদ্র্য কমার কথা। আবার কেউ বলতে পারেন, দারিদ্র্যের হার বেশি বলেই সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা বেশি। এটি আপেক্ষিক বিষয়।’
অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বরিশালে দারিদ্যের হার বেড়ে যাওয়ায় বিস্ময় প্নকাশ করেন।
তিনি বলেন জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বেশি খুলনা জেলায়। সেখানে দারিদ্র্যের হার বেশি হারে বাড়ার কথা। অথচ পাশের বিভাগে দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি।
‘দারিদ্র্য কমানোর প্রক্রিয়ায় দারিদ্র্য সীমার উপরে থাকা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা বেশি জরুরি। কারণ হঠাৎ যেকোনো ধরনের আঘাতে তারা দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারেন।