কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ৩ এপ্রিল
মাদক ব্যবসা,সরকারি জমি দখল ও অবৈধ্য বালু উত্তােলনের সংবাদ এবং প্রতিবাদ করায় সাংবাদিক এর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গত মঙ্গলবার রাতে কুড়িগ্রাম রৌমারি সাংবাদিক আনিছুর রহমান ওপর হামলা চালানাে হয়েছে। তিনি জানায় যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাখাওয়াত হােসেন সবুজ, সহযোগী জাকির হােসেন ও মাদক সম্রাট খ্যাত নুরুন্নবী এ ঘটনা ঘটায় বলে স্থানীয়রা জানায়।
গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত সােয়া ৯টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কর্তিমারী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে
এ ঘটনায় রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযােগ দিয়েছে সাংবাদিক আনিস।
সাংবাদিক আনিছুর রহমান অভিযােগ করেন গত ৯ মার্চ লােকমুখ জানতে পারেন মাদক সম্রাট নুরুন্নবীর বাড়িতে অভিযান চালায় রৌমারী থানার পুলিশের একটি দল। এ সময় ঐ মাদক কারবারির তত্বাবধায়ন থাকা যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাখাওয়াত হােসেন সবুজের সেচ পাম্প ঘরে তল্লাশী করে মেঝেতে মাটি খুঁড়ে একটি পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই বাড়িতে অভিযানের জন্য পুলিশকে এ তথ্য দিয়েছে এমন মিথ্যা অভিযাগ তােলা হয় সাংবাদিক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও ২০২১ সালে কর্তিমারী বাজার ‘যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়’ লেখা দু’টি সাইনবাের্ড টাঙ্গিয়ে জায়গা দখল করেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
ঘর নির্মাণের পর দখল করা ওই জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে ওই কার্যালয়টি ভাড়ায় দেন তিনি।
গত মঙ্গলবার দুপুরে দখলের সেই সময়কার এবং বর্তমান সময়ের দু’টি ছবি ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পােস্ট করেন সাংবাদিক আনিস। এরই জের ধরে ওই রাতেই তারাবি নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরার পথে কর্তিমারী বাজারের আপেলের চায়ের দােকানর সামনে পৌছলে পথ রােধ করে অতর্কিত হামলা চালায় মাদক সম্রাট,নুরুন্নবী ও যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাখাওয়াত হােসেন সবুজ ও প্রধান সহযােগি জাকির হােসেন। একপর্যায় তারা সাংবাদিক আনিসকে বেধরক মারপিটসহ শ্বাসরােধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় সে আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পরে। স্থানীয় মাসুষ তাকে উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
আজকের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি হাসপাতালে সাংবাদিক আনিছুরকে দেখতে গেলে তার ছােট বােন পারভীন আক্তার বলেন আমার ভাই এলাকার নানা অপকর্ম ফাঁস করায় তারা হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন ২০১৭ সালে এই চক্রটি যােগসাজস করে একটি মিথ্যা সাজানাে আইসিটি মামলায় আমার ভাইকে ফাঁসিয়ে দেয়। ওই মামলায় ৭১ দিন জেলহাজতে থাকতে বেরিয়ে আসেন। আবার তারা একি ঘটনা ঘটান। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে মাদক ব্যবসা ও সরকারি জমি দখল কারিদের বিচারের দাবি করছি।
এ ঘটনায় পিআইবি জার্নালিজম এ্যালামনাই অ্যাসােসিয়েশনের (পিবজা) সভাপতি আইনজীবী ও সাংবাদিক রুহি সামশাদ আরা বলেন, সাংবাদিক আনিছুর রহমানের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনত হবে। তা না হলে এলাকায় মাদকসহ অপরাধীদের দৌড়াত্ম আরও বেড়ে যাবে।
রৌমারী প্রেসক্লাবের সভাপতি সুজাউল ইসলাম সুজা বলেন, সাংবাদিক আনিছুর রহমানর ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সফি খান বলেন সাংবাদিকে উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। তা না হলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত শাখাওয়াত হােসেন সবুজ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন সাংবাদিক আনিছুর রহমান দীর্ঘ দিন ধরে আমার সম্পর্ক যা তা প্রচার করে আসছেন। এ নিয়ে কিছু কথা কাটাকাটি হয়েছে। তার ওপর হামলা করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল জামান বলন এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। দ্রুত প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।